একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে বাংলা সাহিত্যের তরুণ লেখকদের এক অনন্য এবং পাঠকপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হলেন তকিব তৌফিক। তকিব তৌফিক-এর প্রথম উপন্যাস 'এপিলেপটিক হায়দার' উপন্যাস প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালের গ্রন্থমেলায়। উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় নালন্দা প্রকাশনী থেকে। ব্যতিক্রমধর্মী শিরোনামের এই বইটি লেখকের প্রথম উপন্যাস হলেও সাড়া পায় দ্রুত। কারণ এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট ছিল বাস্তবমুখী। সামাজিক এই উপন্যাসটি মূলত মৃগীরোগ নিয়ে সমাজের কুসংস্কার নিয়ে এবং আত্মশুদ্ধি নিয়ে লেখা। ২০১৯ সালের গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয় তকিব তৌফিকের রোমান্টিক উপন্যাস 'অধ্যায়'। অধ্যায়-ই লেখককে পৌঁছে দিয়েছিলো অসংখ্য পাঠকের কাছে। তারপর পাঠকপ্রিয়তা থাকে অধ্যায় উপন্যাস। যার মধ্যে রয়েছে লেখকের দারুণ সব কথা মালা এবং কবিতা। একই বছরে লেখক ব্যতিক্রমধর্মী এক বই রচনা করে বসলেন। বইটির নাম 'কাঙালের সংলাপ'। এই বইটি মূলত কথোপকথনের বই। যার শুরু থেকে শেষ শব্দটি সংলাপের মধ্যে দিয়েই হয়। এই ব্যতিক্রম বইটিও রোমান্টিক গল্প নির্ভর। ২০২০ সালের গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয় তকিব তৌফিকের তৃতীয় এবং ত্রয়ী উপন্যাসের প্রথম খণ্ড 'নিদাস্তিয়া'। যা পুরপুরি সফলতা বয়ে আনে লেখক তকিব তৌফিকের জন্য। এবং গল্পের মূল চরিত্র নিদাস্তিয়া'র শেষ পরিণতি থেকে নিষ্কৃতির দাবি উঠে পাঠকমহলে। আর তখন পাঠক মহলে জানানো হয় মূলত এই উপন্যাস একটি ত্রয়ী উপন্যাস। যার আরও দুইটি খণ্ড আগামীতে প্রকাশ পাবে। সেই।খণ্ডগুলোতেই হয়তো 'নিদাস্তিয়া' চরিত্রের মুক্তি হবে। কথাসাহিত্যিক তকিব তৌফিক ব্যতিক্রম সব গল্প লেখেন পাঠকের জন্য। তার গল্প বলে দেয়, তিনি পাঠকের স্রোতে গা ভাসিয়ে উপন্যাস, গল্প রচনা করেন না, তিনি এমন সব গল্প রচনা করেন যা পাঠককে কৌতূহলী করে তুলে আর একঘেয়েমিতা থেকে মুক্তি দেয়। লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো, 'রিঙ্গণপুর'(উপন্যাস), অগস্তিয়া(নিদা:২য় খন্ড), 'রূপন্তী'(উপন্যাস), ক্যাকটাস (কাব্যগ্রন্থ)। কথাসাহিত্যিক তকিব তৌফিকের জন্মস্থান চট্টগ্রাম জেলায়৷ তিনি ফটিকছড়ি উপজেলার, লেলাং ইউনিয়নে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবা মোস্তফা কামাল পাশা এবং মা জোছনা আকতার-এর চার সন্তানের একমাত্র ছেলে সন্তান তিনি। ব্যবস্থাপনা বিষয়ের উপর স্নাতকোত্তর পাশ করা ছেলেটি একদিন বাংলা সাহিত্যের তরুণ লেখকদের তালকায় ভূমিকা রাখবে তা হয়তো তার নিকটস্থ অনেকেই ভাবেনি৷ এখন সেটা তারা দেখতেই অভ্যস্ত। 'ইউনাইটেড ন্যাশন'স হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস (ইউ এন এইচ সি আর)'-এ রেজিষ্ট্রেশন ইউনিটে একজন কর্মী হিসেবে নিযুক্ত। তাঁর ত্রয়ী উপন্যাস 'নিদাস্তিয়া'-এর প্রথম খণ্ডে তার কর্মস্থানের কিছুটা চিত্র ফুটে উঠেছে। এছাড়াও তিনি শরনার্থী শিবিরে তুর্কী পাহাড়ে বসে সূর্যের বিদায় বেলায় দিগন্তরেখায় দৃষ্টি রেখে রচনা করেছিলেন 'আমি শরনার্থী শিবির থেকে বলছি' কবিতাটি।