কাসাস। গল্প শুধু গল্প নয়। হৃদয় গলে, জীবন গড়ে এবং পথ দেখায় আনন্দের অফুরন্ত হায়াতের দিকে। এটি-ই সত্যিকারের কাসাস-গল্প। আর এই গল্প যদি হয় সহিহ হাদিসের শব্দে, বহুল নির্বাচিত ও বিশ্বনবি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুখ-নিঃসৃত তাহলে পাঠক মাত্রই উপকৃত হবেন -এটি একেবারে সোজা কথায় বলা যায়।পৃথিবীর সূচনা থেকে মানুষ গল্প-কাহিনি বলতে ও শুনতে ভালবাসে। এর প্রধান কারণ হল, গল্প থেকে সহজে উপদেশ গ্রহণ ও বাস্তব জীবনে তা সহজে প্রয়োগ করা যায় । তাই প্রত্যেক জাতি, ধর্ম, সমাজ ও ইতিহাস-ঐতিহ্যকে নির্ভর করে নানা গল্প-কাহিনি সৃষ্টি হয়েছে। রোমান, পারসিক, হিন্দি ও আরবিসহ নানা সভ্যতার গল্পের সমৃদ্ধ বই রয়েছে। তেমনি ইসলামি সভ্যতার মাঝে রয়েছে গল্প-কাহিনির সম্ভার। এগুলো ব্যক্তি গঠনে, সমাজ বিনির্মাণে ও রাষ্ট্র গঠনে এবং পরিচালনায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল কালের আবর্তনে ও বিভ্রান্তির বেড়াজালে সেই গল্প-কাহিনি আজ কোন দিক-দর্শন দেয় না, বরং অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়। কুসংস্কারের পাহাড় তৈরি করে, সত্যকে আড়াল করে এবং প্রকৃত আকিদা-বিশ্বাসে ভ্রান্তির প্রলেপ দেয়। রেফারেন্সহীন অসংখ্য বানোয়াট কেস্সা-কাহিনি এখন ওয়াজ-মাহফিল ও জুমার খুৎবায় সরব রয়েছে।মুসলিম সমাজের সমাজিক প্রেক্ষপটে ও বাংলা ভাষাভাষিদের জন্য বিশুদ্ধু হাদিসের বর্ণনায়, কাহিনি থেকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা-শিষ্টাচার সংগ্রহ করে এবং প্রয়োজনীয় যথাযথ বিশ্লেষণ করে একটি গল্প-কাহিনির নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ ইসলামি পাঠাগারে সংযোজন করা খুবই জরুরি ছিল। এমন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে “কাসাসুল হাদিস” গ্রন্থটি একটি সংস্কারমূলক ভূমিকা পালন করবে।বিশেষ করে দ্বিনের দাঈ, ওয়ায়েজ-বক্তা ও ইমাম-খতিবগণের ইসলামি আদর্শ প্রচারে বইটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশা করি।