একজন দাঈ এই একবিংশ শতাব্দীর মানুষের খাবার দাবার নিয়ে বলেন, “We eat, because we are bored”. আসলেই। কিছু করার নেই– চলো কিছু খাই, ভালো লাগছে না– চলো কিছু খাই, এক রুম থেকে আরেক রুমে যাচ্ছেন, ফ্রিজ খুলে কিছু না কিছু মুখে দিচ্ছেন, পেটে ক্ষুধা নেই তারপরও কিছু না কিছু চিবোচ্ছেন! আমরা এখন আর বাঁচার জন্য খাই না, খাওয়ার জন্য বাঁচি। যা কিছু হবে হোক, আমাদের পেট সবসময় ভর্তি। বিশাল সব ভুঁড়ি নিয়ে আমরা ঘুরে বেড়াচ্ছি, এটা আমাদের কাছে মোটেই লজ্জাজনক কিছু নয়, এমনকি যারা ইসলাম চর্চা করেন তাদের কাছেও না, তাদেরকে দেখবেন বরং এই ভুড়ি নিয়ে কত মজা করছেন। অথচ ভুড়িওয়ালাকে দেখে উমার (রাঃ) বলেছিলেন, এটা আল্লাহর আযাব!
.
নবী রাসূল থেকে সাহাবা কিংবা যেকোনো সোনালি প্রজন্মের মধ্যে একটা জিনিস সবসময় এক ছিল, তারা পেটের বিষয়ে সবসময় সজাগ থাকতেন। বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু না হলেই নয়, ঠিক ততটুকু খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতেন। আর এটাই ছিল তাদের আত্মশুদ্ধি, আল্লাহ্মুখীতা আর দুনিয়া বিমুখীতার অন্যতম কারণ। এমনকি চিকিৎসা বিজ্ঞানেও অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ, পেট ভরে খাওয়াটা বারণ। অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণজনিত কারণে যত রোগ বালাই উৎপত্তি, না খেয়ে সেরকম কিছু নেই, মেডিক্যাল পরিসংখ্যানগুলো সেটাই নির্দেশ করে।
.
দ্বীন ইসলামের যুহদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হলো খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রে সংযম। এটা স্বাস্থ্য, দ্বীন, অন্তরের পরিশুদ্ধি সবকিছুর মূলকেন্দ্র। যুহদের উপর আমাদের সালাফদের মধ্যে যারা কলম ধরেছেন ইমাম ইবনু আবিদ দুনিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। “আল জু’ ” তাঁর লেখা এমন এক অনবদ্য বই যা সালাফদের খাওয়া দাওয়ার যুহদ, তাঁরা কতটুকু খেতেন, কি খেতেন, বিলাসিতা কীভাবে পরিহার করতেন, অধিক খাওয়াকে তাঁরা কীভাবে দেখতেন এসব বিষয় আলোচিত হয়েছে। এরই অনূদিত রূপ বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি।