পরিপূর্ণ ও সার্বজনীন জীবনব্যবস্থা হিসেবে ইসলামী শরীয়তে মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সকল দিক ও বিষয়ের মৌলিক নীতিমালা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। হারাম নির্দিষ্ট করে হালালগুলো উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তাওহীদ ও রিসালাতে ঈমানদার যেকোনো মুসলিম উদারচিত্তে শরঈ বিধান অনুসরণের জন্য সংকল্পবদ্ধ হলে, তার জন্য হারামমুক্ত হয়ে হালাল জীবনযাপন খুবই সহজ মনে হবে। কিন্তু হৃদয়-মনে বক্রতা রেখে শরঈ বিধান মূল্যায়ণ বা পর্যালোচনা করে কারো পক্ষে গোলকধাঁধা থেকে বেড়িয়ে আসা সম্ভব নয়। কারণ, ইসলাম মানুষের সামগ্রিক ও সমন্বিত কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য এমন বহু বিধি-নিষেধ জারি করেছে, যার গভীরতা মানুষ তার সীমীত জ্ঞানে স্পর্শ করতে সক্ষম নয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের গবেষণার মাধ্যমে শরঈ বিধানের বাইরে যতো প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে, অল্প দিনের মধ্যেই তার অসারতা প্রমাণিত হচ্ছে। কারণ, ইসলাম শুধু সমূহ বা দৃশ্যমান সমস্যারই সমাধান করেনি; বরং পরিপূর্ণ ও সামগ্রিক কল্যাণকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে। ‘ইসলামে হালাল-হারাম’ শীর্ষক অত্র গ্রন্থখানির লেখক একজন বিজ্ঞ ইসলামিক স্কলার। তার অধ্যাপনা, লেখালেখি-সহ সমগ্র প্রচেষ্টাই মূলতঃ ইসলামী জীবনদর্শন নিয়ে। গ্রন্থে ইসলামী শরীয়তে হালাল-হারামের সীমা সম্পর্কে কুরআন-সুন্নাহর দলীলের ভিত্তিতে তিনি অনেক নতুন বিষয় সংযোজন করেছেন, যা আধুনিক কালে উদ্ভব হয়েছে। মোট এগারোটি অধ্যায়ে গ্রন্থের আলোচনা পরিবেশন করা হয়েছে- (১) ইসলামে হালাল-হারাম, (২) পানাহারে হালাল-হারাম, (৩) ব্যবসা-বাণিজ্য ও আয়-উপার্জনে হালাল-হারাম, (৪) পোশাক-পরিচ্ছদ ও সাজ-গোজে হালাল-হারাম, (৫) বাড়িঘর ও চাষাবাদে হালাল-হারাম, (৬) পেশা গ্রহণ ও চাকরিতে হালাল-হারাম, (৭) দৃষ্টি দান, পঠন-পাঠন, কথোপকথন ও শ্রবণে হালাল-হারাম, (৮) আচার-আচরণ এবং সম্পর্ক সৃষ্টি ও রক্ষায় হালাল-হারাম, (৯) বিয়ে-শাদি, যৌনাচরণ ও স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক স্থাপন-ছিন্নকরণে হালাল-হারাম, (১০) পিতামাতা ও সন্তানের সম্পর্কে হালাল-হারাম, (১১) আনন্দ-বিনোদন ও খেলা-ধুলায় হালাল-হারাম।