আরবী ভাষায় রচিত ‘মহিলা মাসাইল’ এমন একটি সংকলন যার মধ্যে দেশ-বিদেশের মহিলাদের জীবনঘনিষ্ঠ নানা রকম জিজ্ঞাসার সমাধান দিয়েছেন যুগের শ্রেষ্ঠ কয়েকজন ইসলামিক স্কলার এবং সৌদি স্থায়ী ফাওয়া কমিটি। ইসলামী জীবনদর্শনের উপর প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতায় যারা বিশ্ব-মুসলিমের কাছে শ্রদ্ধেয় ও সমাদৃত। তবে হ্যাঁ! কিছু বিষয় ও জবাব এমন থাকতে পারে, যা কারো কাছে গ্রহণযোগ্য নাও মনে হতে পরে। এতে অসুবিধার কিছু নেই, ইসলামী বিধি-বিধানের মৌলিক দু’টি উৎস একেবারেই সহজলভ্য। বিশুদ্ধতা ও মান যাচাই-বাছাইসহ হাদীসের তথ্যভাণ্ডার তো এ যুগে সবার জন্য উন্মুক্ত। এখানকার উত্তরদাতা সম্মানিত ফকীহগণ তাদের সামনে উপস্থিত রেফারেন্স ও তাদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান খাটিয়ে জবাব দিয়েছেন। প্রতিটি প্রশ্নের সাথে সংশ্লিষ্ট উত্তরদাতার নামও যুক্ত করা হয়েছে। আরও অধিক দলীল-প্রমাণসহ ভিন্ন কথা পেশ করার অধিকার তো যে কারোরই আছে। মূলকথা হলো, দীনকে সঙ্কীর্ণতার গণ্ডিতে যেনো আবদ্ধ করা না হয় এবং ইখতিলাফী বিষয়ে অনাকাঙ্খিত বিতর্ক এড়িয়ে ইসলামের মহান আদর্শকে বিশ্ববাসীর সামনে সমুন্নত রাখতে উম্মার প্রতিটি সদস্য যেনো এগিয়ে আসতে পারেন। বলা বাহুল্য যে, কেউ কেউ যুগের অগ্রগতি ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করে ইসলামের অনেক বিধানকে আজকের জন্য অযৌক্তিক বা অপ্রয়োজনীয় মনে করতে পারেন। কিন্তু, না! শুধু বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে ইসলামী জীবন দর্শনের গভীরতাকে স্পর্শ করা সম্ভব নয়। কারণ, মহান আল্লাহ প্রদত্ত বিধি-বিধান সর্বযুগের জন্য এবং সার্বজনীন। এ জন্যই আদর্শ মুমিন ব্যক্তি জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং সর্বোৎকৃষ্ট হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিবে, এটাই ইসলামের দাবি। কারণ, ইসলাম দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণে এমন সব কাঠামো তৈরি করেছে, যেখানে মানুষের নিরাপত্তা ও কল্যাণের সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম বিষয়গুলোও অগ্রাধিকার পেয়েছে। বইটি পড়ে মনে হয়েছে যে, এটি মুসলিম মহিলাদের প্রাত্যহিক মনের অসংখ্য জিজ্ঞাসার উত্তর দিয়ে সাজানো একটি অমূল্য রত্ম। কিছু প্রশ্ন দেখে মনে হবে, আরে আমিও তো এই ব্যাপারে জানতে চাচ্ছিলাম! দেখি, এই বিষয়ে ইসলাম কি বলে? আশা করি, এই সংকলনটি আমাদের সমাজের বিবিধ পেশায় নিয়োজিত মুসলিম মা-বোনদের মনের অনেক জিজ্ঞাসার সমাধান সহজ করে দেবে। বিভিন্ন বিষয়ে সঠিক ও উত্তমটি গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও এই বইটি থেকে তারা উপকৃত হবেন, ইনশাআল্লাহ।