আমেরিকাতে ছাব্বিশ বছর অবস্থানকালে আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ভাবে অনেক মুসলমানের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং কাজ করার সুবিধা সৃষ্টি হয়। এটা ছিল অনুপ্রেরণার বিষয় এবং যা আমার বিশ্বাসকে দৃঢ় করেছিল। স্বীকার করি, আমেরিকাতে অন্যান্য অধিবাসিদের মতো আমিও একজন ভালো মুসলমান হওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পেরেছি, যেটা নিজের দেশে পারিনি। এজন্যে প্রাপ্তসম্মান অধিকাংশই নতুন মুসলমানদের প্রাপ্য। তাদের অনেকেই জ্ঞান এবং অভ্যাসের দিক খেকে আমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আল্লাহু আমাকে তাদের সমকক্ষ হওয়ার সুযোগ দিন।
এখানে বর্ণিত অধিকাংশ মুসলমানই উত্তর আমেরিকার মুসলমান সোসাইটির সাধারন মেম্বার। আমি অনুভব করেছি, তারা তাদের জীবনের এক বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পেরেছে। এ সমস্ত স্থানের নায়কদের অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। বস্তুত, তাদের পরিবর্তন আমেরিকার সমাজের মূল শিকড়কে বিস্ময়াভিভূত করেছে এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সতর্ক করেছে। উদারহণস্বরূপ বলা যায়, ওখানকার দুর্ধর্ষ কয়েদিরা কারাবাসকালীন ইসলাম গ্রহন করার পর অত্যন্ত ভালো নাগরিক এবং শাক্তিকামী বসবাসকারী হিসেবে পরিণত হয়েছে। নতুন আমেরিকার মুসলমানদের উত্তর আমেরিকার কোণে কোণে এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। জন্মসূত্রে মুসলমান এবং নতুন মুসলমানদের আলোকবর্তীকা হিসেবে তারা অবদান রেখে চলেছে। তাদের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য আমেরিকান সমাজকে দিন দিন উন্নত করছে। আমেরিকার একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে আমার একজন ভালো সহকর্মী ছিলেন। ইহুদি ধর্মাবলম্বী এ মহিলার নাম সিন্ডি। উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি খুবই চাহিদাসম্পন্ন। অধিকাংশ শিক্ষকই এ চাকুরিতে বেশ ক্লান্তিবোধ করেন। প্রতি সেমিস্টার শেষে গণিত বিভাগের সবাইকে একটি মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেত হতো। যাতে অন্যান্য বিভাগের সবাইকে নিমন্ত্রণ জানানোর রেওয়াজ ছিল। আমরা সবাই এটাকে এক ধরনের বিনি সুতোর মালা হিসেবে ধরে নিতাম। গরুর মাংসের সঙ্গে টমেটো সস, হালকা ঝাঁঝালো মরিচ মিশিয়ে সাধারণত যা তৈরি হতো। সহকর্মীরা ‘স্লপি জো’ খুবই পছন্দ করত। এক সময় জোর দিয়ে বললাম, পরবর্তীতে আমি গরুর মাংস নিয়ে আসব। সবাই আগ্রহ সহকারে রাজি হলো। মধ্যাহ্ন ভোজের সময় সিন্ডিকে বললাম, তুমি কি খাওয়ার জন্য সৌভাগ্যবতী নও যে, আমি গরুর মাংস নিয়ে এলাম তা খাওয়া জন্য আমরা উভয়েই ধর্মীয় দিক থেকে অনুমতিপ্রাপ্ত? উত্তরে সে বলল, মি আহমদ, আমি একজন খারাপ প্রকৃতির ইহুদি। কখনো কখনো শূকরের মাংসও খাই। এরপর আমি ব্যাপারটি এড়িয়ে যাই........