নবীজির কথাই যদি ধরি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে কখনো ইসলামের বিধি-বিধান নিয়ে দীর্ঘ বক্তৃতা করেননি, কোনো মাদরাসা খুলে ঘণ্টাব্যাপী ইসলামের দরস দেননি, কোনো ওয়াজ-মাহফিলে যোগ দেননি; বরঞ্চ, পথে-ঘাটে, মাঠে-মঞ্জিলে, ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে—পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কেবল তার ওহির বক্তব্য। প্রয়োজনে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করেছেন। কিন্তু দাওয়াত ও আদর্শের প্রচার তিনি করেছে কথায়-কাজে। তাঁর আচার-ব্যবহার, চাল-চলন ছিল তাঁর আদর্শের অনুবাদক। কারণ তাঁর আখলাক ছিল কুরআন; কুরআনই ছিল তাঁর আখলাক! একমাত্র নবীজির মধ্যেই সকল গুণাবলির একক সন্নিবেশ ঘটেছে। অন্য ব্যক্তিবর্গের সবারই এমন কিছু দিক আছে, যা তারা গোপন করতে ভালোবাসেন। কেউ জেনে গেলে বিব্রত হন, জানাজানি হয়ে যাবে—এমন আশঙ্কা তাদের পিছু ছাড়ে না। প্রবৃত্তিক কিংবা পারিবারিক এমন কিছু ব্যাপার থাকে যা তাদের দুর্বলতার কথা ঘোষণা করে, স্বভাবতই তাই তারা এগুলো লুকাতে তৎপর থাকেন। নবীজিই একক ব্যক্তিত্ব যিনি সকল মানুষের সামনে খোলা বইয়ের মতো মেলে ধরেছেন তাঁর জীবন। বইটির কোনো পৃষ্ঠা নেই অনুপস্থিত, মুছে দেওয়া হয়নি কোনো লাইন। যে কেউ চাইলে পাঠ করতে পারে তাঁর জীবন-গ্রন্থ।