সেক্যুলার রাজনীতিতে নেতৃবৃন্দের যে আনুগত্যের কথা বলা হয়, সেখানে মানুষকেই মানুষের প্রভু-উপাস্য বানিয়ে নেওয়া হয়; কারণ সেখানে মানুষই চূড়ান্ত, মানুষই সর্বোচ্চ, মানুষই সার্বভৌম—তাহার ওপরে নাই। পক্ষান্তরে ইসলামে নেতৃত্ব একটি ইবাদাত। নেতৃত্ব দেওয়া ও নেতৃত্বের আনুগত্য—উভয়টিই ইবাদাত। ইসলামে নেতৃবৃন্দের আনুগত্যকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে আল্লাহর ইবাদাতের সঙ্গে—আর তা ততক্ষণ কার্যকর থাকবে, যতক্ষণ নেতৃবৃন্দ সৃষ্টিকে স্রষ্টার বিধানমতে পরিচালনা করবেন। তাই এখানে নেতৃত্ব অর্থ হলো, নিজে স্রষ্টার ইবাদাত করা এবং সকলের জন্য তাঁর ইবাদাতকে সহজ করে দেওয়া। একটি জাতির উত্থানপতনের সঙ্গে নেতৃত্বের সংযোগ-সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। নেতৃত্বের অধঃপতন একটি জাতির পতন যেমন অনিবার্য করে তোলে, তেমনি নেতৃত্বের সংকটই একটি জাতির উত্থানকে করে বিলম্বিত। নেতৃত্বের লোভ ধনসম্পদ ও অর্থবিত্তের লোভের চেয়েও ভয়ংকর। ইসলামের ইতিহাসে মুসলিম জাতির যে উত্থানপতন দেখা যায়, তাতেও নেতৃত্বই মূল অনুঘটক। নেতৃবৃন্দের কারণেই জাতি মুখ থুবড়ে পড়েছে, আবার তাদের অবদানেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। মুসলিম জাতির সামনে নেতৃত্বের শিক্ষাগ্রহণের জন্য যে বিশুদ্ধ উৎস রয়েছে, তা অন্য কোনো জাতির নেই। আসমানি উৎস—স্বয়ং আল্লাহর নবি মুহাম্মাদ (সা.) এর বাস্তব জীবন। তাঁর জীবনের পরতে পরতে নেতৃত্বের যে শিক্ষা রয়েছে তাকে মুক্তা আহরণকারীদের মতো নিপুণতার সঙ্গে এই বইয়ে তুলে এনেছেন সমকালীন প্রথিতযশা লিডারশিপ ট্রেইনার মির্জা ইয়াওয়ার বেইগ। আশা করি আপনাকে জীবনে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে বইটি অসামান্য ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ।