আমাদের বর্তমান যুগটি চলছে ‘ফিতনার যুগ’। চারদিকে ফিতনা আর ফিতনা। আমাবশ্যা রাতের মত চারদিক থেকে ফিতনা আমাদেরকে গ্রাস করে নিচ্ছে। আমাদের ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবনসহ সবখানে রয়েছে ফিতনার আগ্রাসন। ফিতনা আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। চারদিকে শোনা যায় ফিতনার বজ্রধ্বনি। ফিতনার আর্তচিৎকার।
আমাদের নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চৌদ্দশত বছর পূর্বেই ফিতনা সর্ম্পকে বলে গিয়েছেন। উম্মাহকে আগত সকল ফিতনার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। সচেতন করেছেন। ফিতনা থেকে বাঁচতে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক তাগিদ দিয়েছেন। তাই আমাদের সকল ফিতনা থেকে বাঁচতে হবে। ফিতনাময় দিনে ফিতনা থেকে বেঁচে ঈমান নিয়ে রবের আহবানে সাড়া দিতে হবে।
আখেরী জামানার ফিতনাগুলো এত ভয়াবহ ও ঈমান বিধ্বংসী যে, লোকেরা দিনের শুরুতে মুসলিম থাকবে, কিন্তু দিনশেষে সে হয়ে যাবে কাফির। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন—‘আধাঁর রাতের মতো ফিতনাহ আসার পূর্বেই তোমরা সৎ আমলের দিকে ধাবিত হও। সে সময় সকালে একজন মুমিন হলে বিকালে কাফির হয়ে যাবে। বিকেলে মুমিন হলে সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়ার সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বীনকে বিক্রি করে দিবে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস নং—২১৩]
তাই যুগের ফিতনা সম্পর্কে আমাদের জানা কর্তব্য। যদি কেউ ফিতনা সম্পর্কেই না জানে, তাহলে সে কীভাবে নিজেকে ফিতনা থেকে বাঁচাবে? কীভাবে সে তার পরিবার-পরিজন, সমাজ, রাষ্ট্রকে বাচাঁবে? সুতরাং ফিতনা সম্পর্কে জানুন এওবং সতর্ক হোন। ফিতনার যাবতীয় বিষয়গুলো জানতে ও ফিতনার যুগে আমাদের করণীয় জানাতে বিখ্যাত মুফাসসির ইমাম ইবনু কাসির রাহিমাহুল্লাহু রচনা করেছেন—‘আন নিহায়া ফিল ফিতান ওয়াল মালাহিম’। এ গ্রন্থটির অধিকাংশ হাদিস ও বর্ণনা বুখারি, মুসলিম এবং সিহাহে সিত্তা থেকে চয়ন করা হয়েছে। তারই ভাষান্তরিত রূপ হলো—‘আল ফিতান ওয়াল মালাহিম।’ বক্ষমাণ গ্রন্থটি প্রথম অংশের অনুবাদ।