কুরআন বুঝবার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা সাধনার পরও মানুষ কুরআন মজিদের ভাবধারা হৃদয়াঙ্গম করতে সমর্থ হয় না যতক্ষণ না সে সেই কাজে আত্মনিয়োগ করে যা করবার জন্য কুরআন মজিদ অবতীর্ণ হয়েছে। বস্তুত কুরআন মজিদ নিছক কোনো চিন্তা-কল্পনা ও গবেষণা গ্রন্থ নয়। অতএব আরামকেদারায় বসে পাঠ করলেই তা সম্পূর্ণরূপে হৃদয়াঙ্গম করা যাবে না, আবার দুনিয়ায় কোনো ধর্মমত অনুসারে নিছক কোনো ধর্মপুস্তকও নয়। কাজেই মাদ্রাসা, খানকাহ ও টুলে বসে তার অন্তর্নিহিত সমস্ত তত্ত¡কথা সঠিকরূপে জানতে পারা সম্ভব নয়। কারণ ইহা দাওয়াত ও আন্দোলনের গ্রন্থ। তাই পূর্ণরূপে কুরআন অনুধাবন করা তখনই সহজ হতে পারে যদি আপনি তা নিয়ে উঠেন এবং কুরআনি সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহর দিকে বিশ^মানবতাকে আহবান জানাবার কাজ বাস্তবক্ষেত্রে শুরু করেন। অতঃপর আপনার প্রত্যেকটি পদক্ষেপ, প্রত্যেকটি কার্যক্রম এ কুরআন অনুযায়ী হলেই উহা অবতীর্ণ হওয়ার সময় তখনকার লোকদের যে বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ হয়েছিল, আপনার জীবনেও তা লাভ হওয়া সম্ভব হতে পারে। অতঃপর মক্কা, আবেসিনিয়া ও তায়েফের কঠিনতম অধ্যায়গুলো এক এক করে আপনার সম্মুখে উপস্থিত হবে। বদর ও ওহুদ থেকে শুরু করে হোনায়েন থেকে তাবুক পর্যন্ত প্রত্যেকটি অধ্যায়ই সম্মুখে হাজির হবে। আবু জেহেল ও আবু লাহাবের মতো লোকদের সাথে আপনার মোকাবেলা হবে। বহু মুনাফিক ও ইহুদি জাতির সাথেও আপনার সাক্ষাত ঘটবে। মোট কথা কুরআন তার সমগ্র অন্তর্নিহিত ভাবধারা যে আপনার সম্মুখে উদঘটিত করে দিবে তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তাই কুরআনি সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলনের ময়দানে উপস্থিত থেকে কুরআন অনুধাবনের প্রচেষ্টা চালানোই কুরআনের দাবী।