সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। সালাত ও সালাম নাযিল হােক তার বান্দা ও রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তার পরিজন, সহচর ও তারনুসারীদের উপর। ইমাম আবু হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ) ছিলেন মুসলিম উম্মাহর অন্যতম একজন ইমাম, মুজতাহীদ মুতলাক। ইসলামের বিভিন্ন শাস্ত্রে তার অবদান অতুলনীয়। ফিকহ শাস্ত্রে তিনি এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি তার স্বীয় যুগে সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন এবং এখনােও তিনি সম্মানিত। কিন্তু তার মৃত্যুর কয়েকশত বছর পর থেকে তার বিরুদ্ধে প্রচুর পরিমানে অভিযােগ করা শুরু হতে লাগলাে। ইমাম আবু হানীফাকে ঘিরে হানাফী ফিকহের সৃষ্টি।
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের প্রধান চারটি ফিকহী মাযহাব এর মধ্যে হানাফী ফিকহের অনুসারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। বর্তমানে অনেক হানাফীগন তাদের মাযহাবের দোহাই দিয়ে এমন আমল করে যাচ্ছেন তা প্রকৃতপক্ষে হানাফী মাযহাবেই নেই। যেমনঃ উচ্চস্বরে বা সশব্দে যিকির করা, সালাতুল বিতিরের কুনুতের জন্য একটি দু’আকে নির্দিষ্ট করে নেওয়া, কুনুতে নাযিলা পাঠ না করা, জানাযা সালাতের পর আবার দু’আ করা ইত্যাদি। এসব আমলগুলাের ক্ষেত্রে হানাফী ফিকহের নির্দেশনার উল্টো কাজ করে যাচ্ছেন প্রচলিত হানাফীগন! এমন কিছু বিষয় হানাফী ফিকহের মধ্যে থেকে তুলে ধরে প্রকৃত হানাফী ফিকহকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এই পুস্তিকায়।
এছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তাকলীদ বা অন্ধ অনুসরন। যদি কোনাে মাসআলায় ইমাম আবু হানীফার মতের পক্ষে শক্তিশালী কোনাে দলীল না থাকে আর তার মতের বিপরীতে শক্তিশালী দলীল থাকে তাহলে এক্ষেত্রে হানাফীগন কী করবেন তা হানাফী ফকীহদের বক্তব্যের মাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি এই পুস্তিকায়।
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে দু’আ করি, তিনি যেন এই বইটির মধ্যে থাকা সকল ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা করে একে কবুল করে নেন এবং একে আমার, আমার পরিজনের এবং পাঠকদের নাজাতের ওসীলা বানিয়ে দেন। আমীন!