হিজরি সপ্তম শতাব্দীকাল। আব্বাসি খেলাফত নামেমাত্র প্রতিষ্ঠিত আছে। তাদের উল্লেখযোগ্য কোন প্রভাব-প্রতিপত্তি নেই। এ সময় ইসলামি বিশ্বে রক্তপিপাসু দুর্ধর্ষ তাতারিদের আগমন ঘটে। তাতারিরা আব্বাসি খেলাফতের রাজধানী বাগদাদ দখল করে। খলিফাকে হত্যা করে। ইসলামি শহরগুলোকে একের পর এক পদানত করতে থাকে। মুসলিমদের ওপর চালায় অবর্ণনীয় ও লোমহর্ষক নির্যাতন। তারা মুসলিম নারী-পুরুষ -শিশু সবাইকে হত্যা করে। তাদের হাতে স্রোতের মতো বইতে থাকে মুসলিমদের রক্ত। তাদের গতি রোধ করতে পারে এমন কোন শক্তি ছিল না। তাদের মুখোমুখি হওয়ার হিম্মত কোন রাষ্ট্রের ছিল না। তাদের হাতে বারবার অপারাজিত হওয়ায় মুসলিমরা বিশ্বাস করে নিয়েছিল, তাতারিরা অজেয়। এমনকি আরবিতে প্রবাদ রটে গিয়েছিল যে, ‘ইযা কিলা লাকা ইন্নাত তাতারা ইনহাযামু ফালা তুসাদ্দিকু’। অর্থাৎ যদি তোমাকে বলা হয় যে, তাতারিরা পরাজিত হয়েছে, তাহলে তা বিশ্বাস করো না। মুসলিমদের এমনই এক ক্রান্তিলগ্নে পর্বতপ্রতীম মনোবল নিয়ে একটি ইসলামি সালতানাত এগিয়ে আসে। তারা তাতারিদের গতিরোধ করে দাঁড়ায়। তাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। তাদেরকে অত্যন্ত শোচণীয় ভাবে পরাজিত করে। তাদের দম্ভ ও অহংকারকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় এবং বিশ্বকে জানিয়ে দেয় যে, তাতারিরা অজেয় নয়। এ সালতানাতটি ইতিহাসে মামলুক সালতানাত নামে পরিচিত। বক্ষ্যমান গ্রন্থ থেকে পাঠক মামলুক সালতানাত সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে সর্মথ হবেন।