শারিরীকভাবে আমরা কিছুটা অসুস্থ হলেই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যাই। ডাক্তারের দেওয়া প্রেসক্রিপশান অনুসারে ওষুধ সেবন করি। প্রয়োজনে অপারেশান কিংবা ক্যামোথেরাপি পর্যন্ত নিই৷ আর এর জন্যে নিজের কষ্টার্জিত ধন-সম্পদ খরচ করতেও দ্বিধা বোধ করি না। আচ্ছা, দেহের সুস্থতার জন্যে আমরা যতটা দৌড়ঝাঁপ করি, অন্তরের সুস্থতার জন্যে কি তার সিকিভাগও করি? অথচ আল্লাহ তাআলা বলেছেন, "নিঃসন্দেহে সে সফলকাম হয়েছে, যে তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেছে৷ আর সে ব্যর্থ হয়েছে, যে তাকে কলুষিত করেছে।" (সূরা শামস : ৯-১০)। . অন্তর হচ্ছে মানুষের মূল চালিকাশক্তি। যখন অন্তর ঠিক থাকে, তখন জীবনটা সতেজতায় ভরে যায়। কিন্তু অন্তর যখন রোগাক্রান্ত হয়ে যায়, তখন গোটা জীবনটাই বিষণ্ণতায় ছেয়ে যায়। রাসূল স. বলেছেন, "জেনে রাখো, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের টুকরো আছে। যখন তা ঠিক হয়ে যায়, তখন পুরো শরীরই ঠিক হয়ে যায়। আর যখন তা খারাপ হয়ে যায়, তখন পুরো শরীরটাই খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখো, সে গোশতের টুকরোটি হলো অন্তর।" (বুখারি, ১/৫০)। . দেহের যেমন রোগ আছে, রোগের প্রতিকার আছে, ঠিক তেমনই অন্তরেরও রোগ আছে আর সেগুলোর প্রতিকার আছে। তবে দেহের রোগ যদিও মেডিসিন, অপারেশান, ক্যামোথেরাপির মাধ্যমে সারানো যায়, কিন্তু অন্তরের রোগ এ পদ্ধতিতে সারানো যায় না৷ দেহের রোগ যদিও ডায়াগননিসের মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়, কিন্তু অন্তরের রোগ এ পদ্ধতিতে নির্ণয় করা যায় না। তাহলে অন্তরের ব্যাধিগুলোর প্রতিকার কী উপায়ে হতে পারে? অন্তরের রোগ ও তার প্রতিকার বিষয়ে আমাদের পূর্বসূরিগণ বিস্তর কাজ করে গেছেন। উত্তরসূরিদের জন্যে রেখে গেছেন সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। আত্মিক ব্যাধি ও তার প্রতিকার সম্পর্কে "উয়ূবুন নাফসি ওয়া মুদাওয়াতুহা" একটি উল্লেখ্যযোগ্য কিতাব। কিতাবটি লিখেছেন পঞ্চম শতাব্দীর বিখ্যাত আলিম আবূ আবদুর রহমান আস-সুলামী রাহিমাহুল্লাহ। লেখক তার বইতে সত্তরটির মতো আত্মিক ব্যাধি ও তার প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রতিকার বর্ণনার ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহকে প্রাধান্য দিয়েছেন। যারা অন্তর পরিশুদ্ধ অবস্থায় মহামহিম আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে চান, বইটি হতে পারে তাদের জন্যে চমৎকার উপহার৷