আমি যেখানে কাজ করি, সেখানে আমরা কিছু বিষয় নিয়ে পড়ে থাকি আর কিছু বিষয় একেবারে এড়িয়ে যাই। শিশুকালে নির্যাতিত হওয়ার সম্ভাবনা জিজ্ঞেস করি ঠিকই, কিন্তু গত সপ্তাহের রিলেশান নিয়ে না। কী খেয়েছ তা জিজ্ঞেস করা হয়; কিন্তু কয়বার গর্ভপাত করেছে, তা জিজ্ঞেস করা যাবে না। বাবা-মায়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা চিন্তিত; কিন্তু হার্পিসের বেদনা, অনৈতিকতার বিপদ, আর ক্যারিয়ারবাদী নারীদের জীবনে ঘনিয়ে আসা বন্ধ্যাত্ব নিয়ে সবাই চুপ। আত্মহত্যা প্রতিরোধে আমরা জাগ্রত সৈনিক; কিন্তু স্রষ্টা আর জীবনের চূড়ান্ত অর্থ নিয়ে আলোচনাকে মুখ টিপে থামিয়ে দিই।
একচোখা ‘স্বাস্থ্যশিক্ষা’ আমাদের ছেলেমেয়েদের ভুল তথ্য জানাচ্ছে। নারীদেরকে বিশ্বাস করানো হয় যে, তারাও পুরুষদের মতো সন্তান নিতে দেরি করতে পারে। বিরক্ত আর ক্ষুব্ধ হয়ে তাই লিখলাম Unprotected. এসব ঝামেলায় জড়ানোর ইচ্ছে ছিল না; কিন্তু বইটি যেন আমার দরজায় এসে করাঘাত করতে শুরু করেছিল। এর একেকটি অধ্যায় আমার জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। আমার অফিসে আসা প্রতিটি শিক্ষার্থীর সঙ্গে একটু একটু করে বেড়েছে এই বন্ধন। সময় আমাকে মুখ খুলতে প্ররোচিত করেছে আমাকে; কিন্তু এরই সঙ্গে এসেছে ভয় ও দুশ্চিন্তা। পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট হওয়ার জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে আমাকে?
হয়তো ঝামেলা এড়ানোর মানসে আমি নিজের এসব দৃষ্টিভঙ্গি নিজের কাছেই রেখেছিলাম। কারণ, মুখ খুললেই নানারকম তকমা ছুটে আসবে। তাই বিতর্ক এড়িয়ে চলতে থাকি। ইমেইল বা মন্তব্য এসে যখন বিরক্ত করত, রা করতাম না। কিন্তু এরপর দেখা পেলাম ব্রায়ান এবং স্টেসির, তখন থেকেই আমার সমস্যা শুরু হয়। চুপ থাকা কী করে সম্ভব? তাদের গল্পটা তো ব্যতিক্রম কিছু না। দেশ জুড়ে লাখো তরুণ-তরুণীর জীবন তো এই একই গল্প বলে যাচ্ছে।