সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ রাব্বল আলামিনের। আমরা শুধু আল্লাহর ইবাদত করি এবং তাঁরই কাছে সাহায্য চাই। ভুল করলে আল্লাহর কাছেই ক্ষমা চাই। কারণ আমাদের তার কাছেই ফিরে যেতে হবে। আমরা আল্লাহর কাছে সব ধরনের অনিশ্চয়তা এবং অশ্লীল কাজ থেকে পানাহ চাই। আল্লাহ যাকে হেদায়েত দান করেন তাকে কেউ বিপথগামী করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া আর কোনাে ইলাহ নেই। আর কোনাে সত্তার ইবাদত করার সুযােগ নেই। আল্লাহর কোনাে শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, হযরত মুহাম্মদ চ্ছ তাঁর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় হাবীবের ওপর রহম করুন। সেই সাথে তার পরিবার, বংশধর এবং সঙ্গী-সাথীদের ওপরও রহম করুন। এটি আমার জন্য অত্যন্ত প্রশান্তির বিষয়, সম্মানিত ভাই ও বােনদের সামনে সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় উপস্থাপন করতে পারছি। এই সংকটগুলাে কেবল মুসলমান সমাজের নয়; বরং বিদ্যমান সমাজ কাঠামাের অন্তর্নিহিত সংকট। আর প্রতিনিয়ত এই সমস্যাগুলাে যুব প্রজন্মকে আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করে তুলছে। আজকের যুব প্রজন্মের মনে অসংখ্য আদর্শিক ও মনস্তাত্ত্বিক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, যা জীবন সম্বন্ধে ক্রমশ সংশয়ে ফেলে দিচ্ছে। যুব প্রজন্ম এসব সংশয় থেকে এবং সব ধরনের উদ্বিগ্নতা থেকে বাঁচার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনাে কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। ধর্ম ও নৈতিকতা ছাড়া এই সংশয় থেকে মুক্তি পাওয়ার আর দ্বিতীয় কোনাে পথ নেই। ধর্ম ও নৈতিকতা হলাে এমন বিষয়- যা একটি আদর্শ সমাজের মূল উপকরণ এবং এর মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ নিশ্চিত হয়। বস্তুত, ধর্ম ও নৈতিকতা চর্চার মধ্য দিয়ে উন্নতি ও প্রশান্তি অর্জন করা যায়। সেই সাথে অনিশ্চয়তা ও প্রতিকূলতা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। যারা সমাজে বসবাস করে মূলত তারাই সামাজিক কাঠামাে বিনির্মাণ করে । তাই কোনাে সমাজ গঠনে যদি ধর্মকে পাশে রাখা হয়, তাহলে ধর্মই আপন মহিমায় সমাজের মানুষের মধ্যে যােগসূত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়।
আরেকটি বাস্তবতা হলাে, ধার্মিক মানুষেরা যে কোনাে শত্রুর মােকাবেলায় ধৈর্য ধারণ করতে পারে এবং দিন শেষে বিজয়ী হতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আল্লাহ নিজেই ধার্মিক সম্প্রদায়কে সাহায্য করে থাকেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, يا أيها الذين آمنوا إن تنصروا الله ينصركم ويث أقدامكم والذين كفروا فتعسا لهم وأضل أعمالهم “হে বিশ্বাসীগণ! যদি তােমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তােমাদের সাহায্য করবেন এবং তােমাদের পা দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করবেন। আর যারা কাফের, তাদের জন্য আছে দুর্গতি এবং তিনি তাদের কর্ম বিনষ্ট করে দিবেন।” (সূরা মুহাম্মাদ : আয়াত ৭-৮)। সামাজিকভাবে ধর্মের উপযােগিতা তৈরি করার জন্য মুসলমান হিসেবে আমাদেরও কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা যারা ইসলামের পতাকা বহন করছি, তাদের অবশ্যই সত্য ও সরল পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে। কারণ এর মাধ্যমে যেন আমরা নিজেদের হেফাজত করতে পারি, একইভাবে অন্যদেরও হেদায়েতের নির্দেশনা দিতে পারি। আর তেমনটা করতে পারলে, মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমরা উত্তম পুরস্কার। পাব ইনশাআল্লাহ। আমাদের নিয়মিতভাবে আল কুরআন এবং রাসূলের হাদীস অধ্যয়ন। করা উচিত। তাহলে এসব আসমানি নির্দেশনার স্বপক্ষে কথা বলার মতাে কিংবা সেই আলােকে কাজ করার মতাে যােগ্য হয়ে উঠতে পারব। একইসঙ্গে, আমরা মানুষকে হেদায়েতের পথে ডাকতে পারব এবং বাতিল শক্তি ইসলামের বিরুদ্ধে যত ধরনের পরিকল্পিত অপপ্রচার চালাচ্ছে, সেগুলােও বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে মােকাবেলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারব। সর্বোপরি, অন্ধকার হটিয়ে আলােকিত সত্যকে মানুষের সামনে নিয়ে আসতে পারব, ইনশাআল্লাহ। এই কাজগুলাে করতে হলে, ঈমানি চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একনিষ্ঠতা, দায়িত্ববােধ ও সুন্নাহ অনুসরণ করার যে গুরুদায়িত্ব আমাদের ওপর অর্পিত হয়েছে তা পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে। কেবল কথায় আর বক্তব্যে পারদর্শী