যখন দেখতাম জিন শয়তানেরা মানুষকে নিয়ে যেমন ইচ্ছে খেলছে, মানুষ তাদের ভয়ে ফ্যাঁকাসে মুখ নিয়ে রাত কাটাচ্ছে, জীবন থেকে নিরাশ হয়ে যাচ্ছে; অপরদিকে মানুষ শয়তান— কবিরাজ-জাদুকরগুলো আল্লাহর জমিনে ইচ্ছেমত শয়তানি করে যাচ্ছে, এদের জন্য কারও ঘর ভাঙছে, কেউ বছরের পর বছর ধরে অসুস্থ হয়ে থাকছে, কারও বারবার মিসক্যারেজ হচ্ছে, অথবা প্রচণ্ড মেধাবী ছাত্রীর দিনে দিনে সব কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে; এত কিছুর পরেও কবিরাজদের কেউ কিছুই বলছে না। তাদের কুফরী-শিরকী কর্মকান্ডের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না। সাধারণ মানুষ তো বটেই, সামান্য কিছু হলে মাদরাসাপড়ুয়ারা পর্যন্ত কাফির তান্ত্রিক-কবিরাজের দরজায় ধরণা দিচ্ছে। অবচেতন মনে পুরো সমাজ এই শয়তানগুলোকে বসিয়ে রাখছে রবের আসনে। আল্লাহর পানাহ! তখন এই বিষয়গুলো মেনে নিতে পারতাম না, হিসাব মিলত না, এমন কেন হবে?
আমার কাছে সবচেয়ে বেশী জঘন্য মনে হতো কাউকে নিজের ইচ্ছার বিপরীতে বাধ্য করার বিষয়টা। যেমন ধরুন, একটা মানুষের ওপর জিন ভর করে তার শরীর ব্যবহার করে কথা বলছে, যা খুশি করছে, অথবা কাউকে বশ করে যা ইচ্ছা করানো হচ্ছে, অথবা দুজনের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো হচ্ছে। আরও খারাপ লাগত যখন দেখতাম মানুষ সেগুলো চেয়ে চেয়ে দেখছে, কিন্তু কিছুই করতে পারছে না। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস কবিরাজদের দরজায় ঘুরে ঘুরে দুনিয়া-আখিরাত সব নষ্ট করছে। এগুলো আমার কাছে মনুষ্যত্বের অবমাননা মনে হতো। অনুভব করতাম এখানে অন্য কিছু হওয়া উচিত, যা হচ্ছে না।
যা হোক, আল্লাহর শোকর! দেরিতে হলেও আমাদের দেশে রুকইয়াহ শারইয়াহ নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ শুরু হয়েছে। আস্তে আস্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। এখন অনেকেই রুকইয়াহ শারইয়াহ বিষয়ে জানছে। ইসলাম সম্মত স্প্রিচ্যুয়াল হিলিং দিনদিন জনপ্রিয় এবং সহজলভ্য হচ্ছে। তবে এতটুকুতেই সন্তুষ্ট হলে চলবে না, শয়তান বসে নেই, আমাদেরও বসে থাকা যাবে না। সচেতন মানুষের সংখ্যা হাজার থেকে লাখে, লাখ থেকে কোটিতে নিয়ে যেতে হবে।