আমাদের মা-চাচীরা কখনও বাড়ির বাহিরে যেতেন না। কোথাও বেড়াতে যেতে হলে পালকি, সওয়ারী ও গরুর গাড়ীতে কাপড় দ্বারা ঘিরে যেতেন। তারা কোন কারণে বাড়ির বাইরে বের হলে ঘােমটা বড় করে দিয়ে এদিক-সেদিক তাকিয়ে তাড়াহুড়া করে প্রয়ােজন শেষ করে ভিতরে চলে যেতেন। অন্য কোন পুরুষ দেখে ফেললে পাপ হবে এই ভয়ে। এটাই নারীদের প্রকৃত স্বভাব। এমনকি গ্রামের পার্শ্বের হিন্দুপাড়ার মহিলাদেরও ঘােমটা থাকত বড়। তারা জানত না যে, এসিড নিক্ষেপ, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং এগুলাে কি? কিন্তু সমধিকারের নামে বর্তমান নারী সমাজের যে করুণ অবস্থা তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। আর ভবিষ্যতে কি হবে তা আল্লাহই ভাল জানেন। যারা সমঅধিকারের দিকে তাদেরকে ডাক দিয়েছে, তারা নারীদের কতটুকু মর্যাদা ও অধিকার দিতে পেরেছে? পেরেছে শুধু নগ্ন করতে। সমাজ ও জাতিকে ধ্বংস ও কলুষিত করতে। আর নারীদের নগ্ন করে ঈমানদারের ঈমান হরণ করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। তারা তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে শতভাগ সফল হয়েছে। সমঅধিকারের নামে তারা নারীদেরকে ঘর থেকে টেনে বের করে পুরুষদের বানিয়েছে উন্মাদ, ইভটিজার আর নারীদের বানিয়েছে বাজারের পণ্য, বিজ্ঞাপনের মডেল, ভােগের সামগ্রী। অথচ তারা যদি স্ত্রী হিসাবে স্বামীর মনােরঞ্জনের চেষ্টা করত, তার সংসার গুছিয়ে রাখত, মা হিসাবে সন্তান প্রতিপালনে ব্যাপৃত থাকত, তাহলে তারা মা হিসাবে, স্ত্রী হিসাবে মর্যাদার সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন থাকতাে। কিন্তু আজ তারা সেই ইযযত-সম্মান, আদর-স্নেহের পরিবর্তে নির্যাতনের শিকার। আর পুরুষদের জন্য হয়েছে পাপের দিশারী। সমাজের এই করুণ অবস্থা পরিবর্তনে ও জাতির কল্যাণ বিধানে কলম ধরেছি। বইটিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নারী জাতির অধিকার ও মর্যাদা কি? তা কি তাদের কেউ দিতে পেরেছে? আর মিথ্যা সমঅধিকারের প্রলােভনে পড়ে আজ তাদের অবস্থা হয়েছে আরাে করুণ। এ বিষয়টিই নারী সমাজের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছি। বইটি প্রকাশে বিশেষভাবে সহযােগিতা করেছে আমার স্নেহধন্য বড় ছেলে আব্দুল্লাহ বিন ‘আব্দুর রাযযাক । তার জন্য পাঠক সমাজের কাছে বিশেষভাবে দু'আ প্রার্থী। আল্লাহ যেন তাকে দ্বীনের একনিষ্ঠ খাদেম হিসাবে কবুল করেন। সম্মানিত পাঠক সমাজের পরামর্শ পরবর্তী সংস্করণে বিবেচিত হবে ইনশা-আল্লাহ। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এই বইটিকে মানবজাতির কল্যাণার্থে কবুল কর- আমীন! ছুম্মা আমীন!!