সকল প্রশংসা সারা জাহানের রব আল্লাহ তা’আলার জন্য, যিনি তাঁর বান্দার উপর নামায ফরজ করেছেন এবং নামায আদায় ও কায়েমের নির্দেশ দিয়েছেন। যিনি নামাযকে ঈমান ও কুফরের মধ্যকার প্রার্থক্য সাব্যস্ত করেছেন এবং অশ্লীল ও মন্দকর্ম থেকে বিরতকারী বানিয়েছেন।
লক্ষকোটী দুরূদ ও সালাম আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ (ছ:) এর উপর যাঁকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, ‘ আর আপনার প্রতি কোরআন নাযীল করেছি যাতে আপনি মানুষের প্রতি যা নাযীল হয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে পারেন। । (সূরা নাহল-৪৪)।
অত্র আয়াতে নবী করীম (ছ:) এর উপর যে দায়িত্ব অর্পনের কথা বর্ণিত হয়েছে তা তিনি যথাযথভাবে পালন করেছেন। তাঁকে অর্পিত দায়িত্বসমূহের মধ্যে নামায অন্যতম, যা তিনি স্বীয় কথা ও কর্মের মাধ্যমে যথাযথভাবে বর্ণনা করেছেন। এমনকি তিনি একদিন নামায আদায় করে দেখিয়ে সাহাবায়ে কেরামদের বলেন, আমি তোমাদেরকে নামায পড়ে দেখানো উদ্দেশ্য হল, যেন তোমরা আমার অনুকরণে নামায আদায় করতে পার। (বুখারী মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ (স:) তাঁর মত নামায জান্নাতের সু সংবাদ দিয়ে বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা নামায ফরয করেছেন। যে এ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্য সুন্দরভাবে ওযূ করে নির্ধারিত সময়ে নামায আদায় করেছে, রুকূ সিজদা বিণয় এবং নম্রতাপূর্ণ করেছে, তাকে আল্লাহ তা’আলার ক্ষমা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। যে তা করবে না তার জন্য কোন প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে মাফ করতে পারেন কিংবা শান্তিও দিতে পারেন। (আবু দাউদ) এ হাদীস থেকে একজন মুমিনের জীবনে নামায কত গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝা যায়।আমরা অত্র গ্রন্থে মানুষ নামায পড়তে গিয়ে যে সব ভুল-ভ্রান্তি করে থাকে সে সব স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি। আশাকরি পাঠক মনযোগ সহকারে অধ্যায়ন করে নামায পড়লে ইন্শা’আল্লাহ নামায শুদ্ধ হবে।
বক্ষমান গ্রন্থখানার আলোচ্য বিষয় বস্তুর অধিকাংশ সংকলন করা হয়েছে হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহ:) এর বেহেশতী জেওর হতে। আর বাকী অংশ সংগৃহীত হয়েছে হযরত মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন আলবানী রচিত এবং হযরত মাওলানা আবু নাঈম অনুদিত রাসূল (স:) এর নামায এবং সম্পাদক মন্ডলী সম্পাদিত দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম থেকে। পাঠক সমাজ যদি গ্রন্থখানা অধ্যয়ন করে উপকৃত হতে পারেন তবেই আমাদের এ প্রচেষ্টা সার্থক হবে। পরিশেষে মহান রব্বুল ‘আলামীনের দরবারে প্রার্থনা তিনি যেন এর ভুলত্রুটি মার্জনা করে দিয়ে পাঠক সমাজসহ আমাদের সকলকে উপকৃত হওয়ার তওফীক দান করেন এবং পরকালের নাজাতের উসিলা করে দেন। এ গ্রন্থের প্রকাশের উজ্জ্বল ভবিষ্যত ও মঙ্গল কামনা করছি, আল্লাহ তা’আলা যেন আও বেশি বেশি এ জাতীয় খেদমত করার তওফীক দান করেন। আমীন, ইয়া রব্বুল আলামীন।