কিছু মানুষের বাস স্বপ্নের জগতে। আর কিছু মানুষের বাস বাস্তবে। কিন্তু সেই বাস্তব স্বপ্নের চেয়েও রোমহর্ষক। পাড়াগাঁয়ের এক শিক্ষিত বেকার যুবক শঙ্কর। বাবার অসুখ, অভাব-অনটন, পাটকলের ছোট চাকুরি। এই তাঁর জীবন। জীবন সাধারণ হলেও, তাঁর মনোজগতে ছিল রোমাঞ্চ আর দুঃসাহসিক সব স্বপ্ন। তাঁর মন ছুটে বেড়ায় পৃথিবীর দূর দেশে রোমাঞ্চকর কাজের মাঝে। এক গাঢ় স্বপ্নের গভীরে। সেই স্বপ্ন পূরণের ডাক আসে এক অপ্রত্যাশিত ঘটনায়। এই ডাক ফিরিয়ে দেবার মতো মানুষ শঙ্কর নয়। পাড়াগাঁ পিছনে ফেলে সে নেমে পড়ে আফ্রিকার বুকে এক দুঃসাহসিক অভিযানে। বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় (১৮৯৪-১৯৫০) এই উপন্যাসটি লিখেছিলেন ১৯৩৮ সালে। এ যুগেও বাংলা সাহিত্যে মৌলিক রোমাঞ্চ উপন্যাসের হাহাকার রয়ে গেছে, সেখানে ৮৩ বছর আগে লেখা এই উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যের এক পরম বিস্ময়। এক অকল্পনীয় রোমাঞ্চ আর দুঃসাহসিক অভিযান এই উপন্যাসে স্থান পেয়েছে। লেখক বোধহয় এ কারণেই বইয়ের ভূমিকায় লিখে দিয়েছিলেন, ‘চাঁদের পাহাড়’ কোনো উপন্যাসের অনুবাদ নয়, বা ঐ শ্রেণীর কোনো বিদেশি গল্পের ছায়াবলম্বনে লিখিত নয়। এই বই-এর গল্প ও চরিত্রগুলি আমার কল্পনা-প্রসূত।’