হাররান থেকে দামেশকের দিগন্তে হিজরী সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে উদিত এক ক্ষণজন্মা অসাধারণ প্রতিভার নাম আহমাদ ইবন আব্দুল হালিম ইবন তাইমিয়্যাহ। সমকালীন আলেমগণ তাঁকে শাইখুল ইসলাম উপাধিতে ভূষিত করেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ৬৬১ হিজরীর রবিউল আউয়াল মাসে এক সুবিখ্যাত আলেম পরিবারে। ছয় বছরের মাথায় পিতার সাথে হিজরত করে চলে আসেন সিরিয়ার রাজধানী দেমাস্কে। সাত বছর বয়সে তিনি প্রথমে কুরআন হিফযের মাধ্যমে ইসলামী জ্ঞানের আলােকিত আঙ্গিনায় প্রবেশ করেন। মাত্র বাইশ বছর বয়সেই তিনি জ্ঞানের জগতে প্রস্ফুটিত গােলাপের মতাে ফুটে উঠেন। অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী এই মহান ব্যক্তিত্ব ইবন কুদামা আল-মাকদিসি-এর লেখা রওদাতুন নাযির’ কিতাবটি এক দিনে মুখস্ত করে নেন। আঠারাে বছর বয়সে তিনি ফাতওয়া দানের অনুমতি লাভ করেন। একুশ বছর বয়সে ইবন তাইমিয়্যাহ তকালীন ইসলামী বিদ্যাপীঠ দারুল হাদীস আস সুক্কারিয়ায় অধ্যাপনার দায়িত্ব লাভ করেন। ত্রিশ বছর বয়সে তাঁকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণের অনুরােধ জানানাে হলেও তিনি তা গ্রহণ করতে রাজি হননি। তিনি দামেশকের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কুরআনের তাফসীর পেশ করতেন। ৭২৮ হিজরীর ২০ যিলকদ মধ্যরাতে মাযলুম হয়ে মৃত্যুর মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। আলেমদের অনেকেই তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক বলে উল্লেখ করেছেন। মুসলিম উম্মাহ’র হিদায়াত ও সুন্নাহ’র অনুসরণের জন্য ইসলামী লাইব্রেরিতে তাঁর মাজমূ' ফাতওয়ার মতাে একটি কিতাবই যথেষ্ট। তাঁর এ সংকলনটি ৩৭ খণ্ডে প্রকাশিত জ্ঞানের এক বিশ্বকোষ।