আপনি একদিকে কামরায় এসি চালু করলেন, অন্যদিকে কামরার দরজা-জানালা খুলে দিলেন, এমতাবস্থায় এসি কি কাজ দেবে? তদ্রুপ আপনি একদিকে কুরআনে কারিম তিলাওয়াত, তাহকিক ও তাফসির অধ্যয়ন করলেন, আরেকদিকে কুরআনে চিহ্নিত ইসলামের শত্রুর সাথে মিত্রতা গড়লেন; এতে কি আপনি ‘ইউদিলু বিহি কাসিরান’-এর আওতায় পড়ে যাবেন না? এই কুরআন যে ‘লিল্লাতি হিয়া আকওয়াম’-এর জন্য হিদায়াতের স্বর্গীয় ফল্গুধারা বয়ে আনে—তা তো আপনার অজানা নয়।
পবিত্র কালামুল্লাহ শরিফ চার শত্রুকে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে : ইহুদি, খ্রিষ্টান, মুশরিক ও মুনাফিক। সেকাল-একাল, পূর্ব-পশ্চিম—এরাই আমাদের জাতশত্রু। আমাদের প্রথম কিবলা কেড়ে নেওয়া, সেখানে আমাদের প্রবেশাধিকার রুদ্ধ করা কি ইহুদিদের কাজ নয়? নানা ফ্রন্টে, ভিন্ন ভিন্ন ছদ্মাবরণে, দেশে-দেশে কি খ্রিষ্টানরা আমাদের বিরুদ্ধে জোরদার করেনি অসম যুদ্ধ? হিন্দুর অবয়বে আসাম-গুজরাট-কাশ্মিরে, বৌদ্ধের চেহারায় উইঘুর-আরাকানে কি মুশরিকরা আমাদের সঙ্গে কিঞ্চিত মানবিক আচরণও দেখিয়েছে?
এ তো গেল বাইরের শত্রু। ঘরের শত্রুরা কেমন ত্রাহিদশা ঘটাচ্ছে—তার খবর কি রাখছেন আপনি? মুনাফিক-জিন্দিকের পরিচয় জানা না থাকলে তো আপনারও এই অভিধায় ধন্য (!) হবার সমূহ আশঙ্কা! শিয়া-নুসাইরির খবর রাখলেন, চিনলেন না নব্য খারেজি আর মুরজিয়াদের। তো আপনি প্রাণসংহারক অজ্ঞতায় ভুগলেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হোক তা চান, আবার খিলাফাতের নাম শুনলে ভ্রূ কুঁচকান। কালো পতাকার নাম শুনলে রি রি করে ওঠে গা। গণতন্ত্র আর জাতীয়তাবাদে স্বস্থি খুঁজতে চান—এ কেমন দ্বিচারিতা আপনার?
পাঠক! এমন দ্বিমুখী মুনাফিকি হতে রক্ষা পেতে ফিতনার বজ্রধ্বনি আপনাকে কেবল কুইনাইনই দেবে না; টনিকও সরবরাহ করবে। সমকালীন ফিতনা-সংক্রান্ত যাবতীয় জিজ্ঞাসার খোল্লামখোলা জবাব পাবেন আলোচ্য গ্রন্থে। হৃদকমলের কৃষ্ণগহ্বরে তুমুল ঘূর্ণি তুলে এটি আপনাকে বসাবে সফেদ আলোর সামিয়ানায়। লেখক আলী হাসান উসামা ইলমি আবহে দীনি এদারায় বাস করা সত্ত্বেও বৈশ্বিক পট ও উম্মাহর অধঃগতি সম্পর্কে সম্যক অবগত বলেই হয়তো তিনি নিজস্ব চেতনার শুদ্ধতা এবং লেখালেখির স্বকীয়তায় অন্যদের চেয়ে আলাদা। তার স্বভাবজাত প্রতিভা ও স্বকীয় চেতনার চর্চিত স্ফূরণ ‘ফিতনার বজ্রধ্বনি’ আমাদের সেই বার্তাই দিয়ে যায়।