তাতারিদের হাতে সালজুকি সাম্রাজ্যের পতন হলে উসমান বিন আরতুগাল ১২৯৯ সালে স্বাধীনভাবে প্রতিষ্ঠা করেন উসমানি সাম্রাজ্য। আনাতোলিয়ার একসময়ের এই ছোট্ট জায়গিরটি পুরো এশিয়া মাইনর, পশ্চিম এশিয়া, পূর্ব প্রাচ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা আর উত্তর-পূর্ব ইউরোপে মোট ঊনত্রিশটি প্রদেশ নিয়ে প্রায় ৫২ লক্ষ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত ছিল। যে সীমানায় পৃথিবীর বর্তমান মানচিত্রে প্রায় ৪২ টি দেশের অবস্থান। কিন্তু আফসোসের বিষয়, ১৯২৪ সালের ৩ মার্চ ইসলাম বিদ্বেষী পশ্চিমাদের ক্রীড়নক মুস্তফা কামাল পাশা এ খেলাফতের কবর রচনা করেন।উসমানি খেলাফত ছিল একটি দীর্ঘমেয়াদী- সবচেয়ে বৃহৎ, সামরিক শক্তিধর ও সর্বশেষ ইসলামি খেলাফত। দুর্দান্ত ও মহাপ্রতাপধর এ সাম্রাজ্যের ভয়ে তৎকালীন অপরাপর সাম্রাজ্যগুলো কাঁপত থরথর করে! স্বয়ং আমেরিকা ও রাশিয়া উসমানি খেলাফতকে কর প্রদান করত! বেশি দূরের নয়-এ ইতিহাস মাত্র একশ বছর আগের!আমরা এই খেলাফতের বিভিন্ন যুদ্ধকাহিনী জানতে পারলেও খেলাফতের সোনাফলা মাটি-প্রকৃতি, সোনালি দিন-রাত আর সোনার সেই রাজা-প্রজাদের সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না বললেই চলে! উসমানি খেলাফতের সুদীর্ঘ ছয় শতাধিক বছরের যুগ-যুগান্তর ও কাল-কালান্তরের বাঁকেবাঁকে ঘটে যাওয়া ঈমান জাগানিয়া ও হৃদয়ছোঁয়া স্বপ্নিল কাহিনী, বর্ণিল গল্প ও স্বর্ণালি ইতিহাসের এক অতুলনীয় সমাহার এই ‘উসমানি খেলাফতের স্বর্ণকণিকা’ গ্রন্থটি। যে গ্রন্থটি ঐশী বিধানে পরিচালিত একটি সাম্রাজ্য, একটি জাতি ও একটি বিশাল সমাজের কতগুলো সোনার মানুষের সোনালি অবস্থা-ব্যবস্থাকে ফুটিয়ে তুলেছে। হেথা-হোথা ছড়ানো-ছিটানো বিক্ষিপ্ত কাহিনী, গল্প ও ইতিহাস-টুকরোকে বইটি একই সূতোয় গেঁথে নিয়ে এসেছে। সেই হিসেবে বইটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে আগাগোড়া উসমানি খেলাফতের ইতিহাসের কোনো বই নয়; বরং উসমানি খেলাফতের বাস্তব সত্য কিছু ঈমানদীপ্ত, চমকপ্রদ ও শিক্ষণীয় কাহিনীর অনবদ্য সঙ্কলন।