তাঁর জন্ম ও বাল্যকাল সম্বন্ধে তেমন কিছু জানা যায় না। ইবন আসাকির তাঁর তারীখে ’আমর ইবন ’আস রা. হতে একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বর্ণিত হয়েছে,
একদিন ’আমর ইবন ’আস কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবসহ বসে আছে, এমন সময় হৈ চৈ শুনতে পেলেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, খাত্তাবের একটা ছেলে হয়েছে। এ বর্ণনার ভিত্তিতে মনে হয়, হযরত ’উমারের জন্মের সময় বেশ একটা আনন্দোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
.
তাঁর গায়ের রং উজ্জ্বল গৌরবর্ণ, টাক মাথা, গণ্ডদেশ মাংসহীন, ঘন দাড়ি এবং শরীর দীর্ঘাকৃতির। হাজার মানুষের মধ্যেও তাঁকেই সবার থেকে লম্বা দেখা যেত।
যৌবনের প্রারম্ভেই তিনি তৎকালীন অভিজাত আরবদের অবশ্য-শিক্ষণীয় বিষয়গুলি যথা: যুদ্ধবিদ্যা, কুস্তি, বক্তৃতা ও বংশ তালিকা শিক্ষা প্রভৃতি আয়ত্ত করেন। তিনি ছিলেন তাঁর যুগের একজন শ্রেষ্ঠ কুস্তীগির। আরবের ‘উকায’ মেলায় তিনি কুস্তি লড়তেন।
আল্লামা যুবইয়ানী বলেছেন: ‘উমার ছিলেন এক মস্তবড় পালোয়ান।’ তিনি ছিলেন জাহিলি আরবের এক বিখ্যাত ঘোড় সওয়ার। আল্লামা জাহিয বলেছেন: ‘উমার ঘোড়ায় চড়লে মনে হত, ঘোড়ার চামড়ার সাথে তাঁর শরীর মিশে গেছে।’ [আল-বায়ান ওয়াত তাবয়ীন]
.
দিনের বেলা কুস্তি আর রাতে মদের আসরে বুঁদ হয়ে পরে থাকা- এমনি ছিল উমারের যৌবনকাল। কে জানতো, এই সাধারণ একরোখা ধরনের যুবকটিই একদিন ‘ফারুকে আযমে’ পরিণত হবেন!
তাঁর ইসলাম গ্রহণ ছিল পুরো মক্কাকে কাপিয়ে দেয়ার মত। ইসলাম তাঁর পুরো জীবনকে যে পাল্টে দিয়েছিল। তাঁর চিন্তাজগত এতটাই উঁচুতে পৌঁছে গিয়েছিল, কেবল তাঁর অভিমতের কারণে কুরআনের বেশ কয়েকবার আয়াত নাজিল হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ আল্লাহর নিকট তার স্ট্যাটাস দেখে বলতে বাধ্য হয়েছিলেন- “আমার পর যদি কেউ নবি হত তাহলে উমর হত সেই নবি” !!
ইসলাম তাঁকে এমনি শ্রেষ্ঠত্ব দিল যে, এই মহান মানুষটি একসময় শাসন করলেন অর্ধ জাহান। আজও তিনি জনসাধারণ থেকে শাসকবর্গ সবার নিকট অনুসরণীয় হয়ে আছেন। তিনিই উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু।
.
কীভাবে অন্ধকারের অতলে ডুবে থাকা মানুষটি দীপ্তিময় আকাশের চূড়ায় পৌঁছে গেলেন?
কেমন ছিল তাঁর শাসন-ব্যবস্থা, রণকৌশল, যার আদলে তিনি অর্ধ পৃথিবীতে খিলাফার পতাকা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন?
জানতে হলে পড়তে হবে, ড. মুহাম্মাদ আলি সাল্লাবি এর রচিত ‘আমিরুল মুমিনিন উমর ইবনুল খাত্তাব’ (রদ্বি.)