ঈসা ইবনে মূসা হাশেমী। খলীফা আবু জাফর মনসুর আব্বাসীর অন্যতম সভাসদ। স্ত্রীকে অতি ভালোবাসতেন। এক চাঁদনি রাতের কথা। জোছনায় বসে স্ত্রীর সাথে গল্প করছিলেন। হঠাৎ স্ত্রীর রূপে মুগ্ধ হয়ে বলে বসলেন- ‘তুুমি যদি চাঁদের চেয়েও সুন্দর না হও তাহলে তুমি তিন তালাক।’ ইসলামের দৃষ্টিতে তালাকে কোনো রসিকতা নেই। ‘তিন তালাক’ বলতেই স্ত্রী পর্দার ভেতরে চলে গেল। বলে গেল-আপনি তো আমাকে তালাকই দিয়ে ফেলেছেন। বেচারা ঈসা সারা রাত নির্ঘুম অস্থির। সকালে ওঠে খলীফা মনসুরকে পুরো কাহিনী শোনালেন। মনের অনুতাপ ও অস্থিরতার কথাও বললেন। খলীফা মনসুর তখন নগরের ফকীহ এবং মুফতীগণকে ডেকে পাঠালেন। সকলের সামনে ঘটনাটি তুলে ধরে সমাধান জানতে চাইলেন। প্রায় সকলেই বললেন- মানুষ তো আর চাঁদের চেয়ে সুন্দর হয় না। সুতরাং স্ত্রী তালাক হয়ে গেছে। মজলিসে ইমাম আজম আবু হানীফা রহ. এর একজন ছাত্র ছিলেন। তিনি নীরব। খলীফা সবশেষে তাঁর মতামত জানতে চাইলেন। তিনি বললেন- তালাক হয়নি। কেন, কেন? সবাই অবাক! তখন তিনি পাঠ করলেন-....... এবং বললেন, আল্লাহ তায়ালা এখানে সকল মানুষকেই সবচেয়ে সুন্দর গঠনে সৃষ্টি করেছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সুতরাং মানুষ সকল সৃষ্টির চেয়ে সুন্দর। এমনকি চাঁদের চেয়েও। কাজেই ‘তুমি যদি চাঁদের চেয়ে সুন্দর না হও’ কথার কারণে তালাক হয়নি। এ কথায় মজলিসের সবাই অবাক। কেউ তার কথার বিরোধিতা করলেন না। অবশেষে খলীফা মনসুর ‘তালাক হয়নি’ মর্মেই ঘোষণা দিলেন।