বর্তমানে অন্যায়-অশ্লীলতার যে জোয়ার চলছে, মানুষের মাঝে দ্বীনবিমুখিতার যে মেজাজ পরিলক্ষিত হচ্ছে— এসব কিছুর উল্লেখযােগ্য একটি কারণ হচ্ছে, দ্বীন সম্পর্কে মানুষের ব্যাপক অজ্ঞতা। বর্তমানে মুসলিমদের মাঝে এমন অনেক লােক আছে, যারা গুনাহে লিপ্ত হচ্ছে; অথচ গুনাহটাকে গুনাহ মানতেই নারাজ। হারাম। কাজগুলাে আজ ভিন্ন নামে মানুষের মাঝে প্রসার | পাচ্ছে। সুদকে মুনাফা, ঘুষকে হাদিয়া-উপঢৌকন বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মদ বেচাকেনা চলছে। কোমল পানীয়ের নামে। অবাধে জিনা-ব্যভিচার। চালিয়ে যাচ্ছে মন ফ্রেশ এর দোহাই দিয়ে। জাস্ট ফ্রেন্ডশীপ বলে ছেলে-মেয়েরা যত্রতত্র ঘুরে। বেড়াচ্ছে জোড়াবদ্ধ হয়ে। এভাবে নাম বদলিয়ে সকল হারাম কাজকে হালালীকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইসলামবিদ্বেষী মহল। তারা হারাম কাজগুলােকে মুসলিমদের মাঝে ব্যাপক প্রসার করতে প্রতিযােগিতার আয়ােজন করে যাচ্ছে। আর মুসলিমদের ছেলে-মেয়েরা সেসব প্রতিযােগিতায়। উল্লাসের সাথে অংশগ্রহণ করছে। এভাবেই এক এক করে মুসলিমদের অন্তর থেকে হারামকে হারাম জানার অনুভূতি শূন্য হয়ে পড়ছে। তারা অনেক হারামকে আজ সাধারণ ব্যাপার মনে করছে। তাছাড়া স্কুল-কলেজের শিক্ষাব্যবস্থাও আজ এতই নাজুক যে, আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্যশীল বান্দা। হওয়ার শিক্ষা সেখান থেকে পাওয়া যায় না। যার। ফলে সবদিক থেকে মুসলিমদের সন্তানরা দ্বীন-ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে যাচ্ছে। তারা হালাল-হারাম, ন্যায়-অন্যায়ের ব্যবধান করতে পারছে না। হারামকে তুচ্ছ জ্ঞান করছে। যেসব হারামকে আজকের অনেক মুসলিমই তুচ্ছ মনে করে থাকে, বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে এমন বিষয়গুলােকে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা সকলকে বুঝার ও দ্বীনমুখী হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন!
আল্লাহ তাআলা তাওবাকারীদের ভালােবাসেন। বান্দা যদি কোনাে গুনাহ করে ফেলে, অতঃপর যদি সে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা। করে, আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করেন। যেহেতু আমরা নবী কিংবা রাসূল নই। গুনাহ থেকে একেবারে নিস্পাপ থাকা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই জীবন চলার পথে ইচ্ছা-অনিচ্ছায়। আমাদের কিছু ভুল-ত্রুটি হয়েই যায়, কিছু গুনাহ সংঘটিত হয়ে যায়। তাে আমাদের জন্য করণীয়। হচ্ছে- সর্বাত্মকভাবে গুনাহ’র পরিবেশ থেকে দূরে থাকা ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। যদি কখনাে গুনাহ হয়ে যায়, সঙ্গে সঙ্গেই অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে তাওবা-ইস্তেগফার করা, ভবিষ্যতে গুনাহ না করার দৃঢ়সংকল্প করা। তাে | আল্লাহ যেসব বিষয়কে হারাম করেছেন অর্থাৎ যা। কিছু করা গুনাহ, যারা সেগুলােকে হারাম মনে। করে, গুনাহ হিসেবেই জানে; তাদের পক্ষেই সম্ভব হয়— কখনাে গুনাহ করে ফেললে তাওবা। করার। আর যারা হারাম কাজকে হারাম মনে করে। কিংবা কোনাে হারামকে তুচ্ছ ব্যাপার মনে। করে, তারা তাতে লিপ্ত হলে তাওবা করার। প্রয়ােজন মনে করে না। এ জন্যই বর্তমানে দেখা। যায় অনেক মুসলমানই অহরহ মারাত্মক হারাম। কাজ করে চলছে। তারা হারামকে তুচ্ছ মনে করে। তাতে জড়িয়ে পড়ছে। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে লেখক এমন কিছু মারাত্মক হারাম কাজের কথাই উল্লেখ । করেছেন। আশা করি, এ গ্রন্থখানা অধ্যয়ন করে নারী-পুরুষ সকল শ্রেণির মুসলমানরা উপকৃত হতে পারবে এবং তারা হারাম কাজসমূহ থেকে বেঁচে থাকতে সচেষ্ট হবে। ইন-শা-আল্লাহ!