সভ্যতা এক চিরন্তন নিয়ম মেনে চলে। অপেক্ষাকৃত উন্নত কোনাে সভ্যতার সাক্ষাৎ পেলে সে তার নিকট আত্মসমর্পণ করে। বিলিন হয়ে যায় তার মাঝে। সভ্যতার উন্নতি–অবনতি উভয়ই নির্ভর করে মানুষের ওপর। কারণ, সভ্যতার মূল উপজীব্যই হলাে মানুষ। এই মানুষ যখন সুনির্দিষ্ট কতক মৌলিত বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, তখন সভ্যতা দাড়িয়ে যায় শক্ত ভিত্তির পাটাতনে। নিশান ওড়াতে থাকে বিশ্বব্যাপী। আর মানুষ যখন সেই মৌলিক ভিত্তি হারিয়ে ফেলে, তখন সভ্যতা প্রস্তুত হতে থাকে অন্য কােনাে উন্নত সভ্যতার বুকে ঝাপিয়ে পড়ার। গ্রিক, রােমান ও পারসাের মতাে প্রতাপশালী সভাত এই দুটো নিয়ম মেনেই উত্থান–পতনের মুখােমুখি হয়েছিল। গ্রিক সভ্যতা আত্মসমর্পণ করেছিল রোমান সভ্যতার কাছে, আর রােমান ও পারস্য সভ্যতা আশ্রয় খুঁজে পেয়েছিল বিশ্বজনীন সভ্যতা ইসলামের কোলে।
ধীরে ধীরে ইসলামি সভ্যতার ধারক–বাহকদের বিচ্যুতি ঘটে। গ্রিক ও রােমান সভ্যতার ঔরস থেকে জন্ম নেওয়া আজকের পশ্চিমা সভ্যতা বুদ্ধিবৃত্তিক ভিত্তি হিসেবে বেছে নেয়ায় ইসলামের চিরন্তন উৎসকে; এগিয়ে যায় নানান আবিষ্কার ও বৈজ্ঞানিক উকর্ষতায়। পুরাে বিশ্বকে ভেড়াতে থাকে নিজের প্রভাব–বলয়ে। কিন্তু আজকের পশ্চিমা সভ্যতায় যেসব আচরণ ও বৈশিষ্ট্য দৃশ্যমান, সেসব কারণেই পতন ঘটেছিল তার জন্মদাতার। এটাই যে চিরায়িত নিয়ম।
তাহলে কি অনিবার্য পরিণতি হিসেবেই এই সভ্যতার পতন অত্যাসন্ন? তখন কোথায় গিয়ে সভ্যতা আশ্রয় নেবে? আমরা দাবি করছি, সভ্যতা তার দীর্ঘ সফর শেষে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে আজ ইসলামের উদার বুকে ফিরে আসার দ্বারপ্রান্তে। ইসলাম : সভ্যতার শেষ ঠিকানা। কিন্তু কীভাবে? চলুন উত্তর খুঁজি সভ্যতার বন্ধুর প্রান্তরে . . .