ইসলাম কখনোই বিজ্ঞানের অনুগামী নয় বরং বিজ্ঞানকেই বার বার ফিরে আসতে হয়েছে ইসলামের দিক। এই কথাটির দলিল সহ প্রমান মানুষের মন থেকে হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছাতে ‘বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান’ বইটি লেখা হয়েছে।
বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান’ নামক এই গ্রন্থকে দু’টি পর্বে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম পর্বে আলোচনা করা হয়েছে, বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে মুসলমানদের অবদান। দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা করা হয়েছে, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির উন্নয়নে মুসলমানের অবদান নিয়ে।
রসায়ন বিজ্ঞান ও পদার্থ বিজ্ঞানে মুসলিম হিসেবে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছন জাবির ইবনে হাইয়ান। যার মৌলিক আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে বর্তমান রসায়ন বিজ্ঞানের অধিষ্ঠান। আধুনিক কেমিষ্ট্রির জনক হিসাবে আখ্যা দেয়া হয় তাকে। কেবল রসায়ন নয় সাথে পদার্থবিজ্ঞান, গণিতসহ বিজ্ঞানের অন্যান্য শাস্ত্রেও ছিল তার অসাধারণ দখল। প্রায় দুই হাজারেরও অধিক গ্রন্থ রচনা করেন এই মহান বিজ্ঞানী। এছাড়া কোরআানের সাথে রসায়ন ও পদার্থ বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়েও প্রচুর তথ্য রয়েছে বইটিতে। মুসলিম বিজ্ঞানী আল খাওয়ারিজমি হচ্ছেন বীজগণিতের জনক। গণিত, ভূগোল, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও মানচিত্র বিজ্ঞানে আল খাওয়ারিজমির অবদান কি? বীজগণিত ও ত্রিকোণমিতি উদ্ভাবনের ভিত্তি স্থাপন কিভাবে করেছেন? খালিদ বিন ইয়াজিদ, জাফর আস সাদিক, আব্বাস ইবনে ফিরনাস, উমার খাইয়াম, আল মুকাদ্দাসী, হাসান ইবনে আব্দুল্লাহ কে ছিলেন? বিজ্ঞানে তাদের অবদান কি ছিলো? জানতে বইটি পড়তে হবে।
লেখক বইটিতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যেমনঃ চিকিৎসাশাস্ত্র, রসায়নশাস্ত্র, জ্যোতিবির্দ্যায়, পদার্থ বিজ্ঞান, স্থাপত্যবিদ্যা, গণিতশাস্ত্র ইত্যাদি সহ আরো কতিপয় শাখায় মুসলমানদের অবদানের কথা বর্ণনা করেছেন। সাথে প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির উন্নয়নে যেমনঃ সংগীত শাস্ত্র, চিত্র শিল্প, হস্ত লিখন শিল্প, শিল্প কলা ইত্যাদি মুসলমানদের অবদানের ইতিহাস খুব সুন্দর ভাবে যথেষ্ট প্রমান দিয়ে বর্ননা করেছেন। জ্ঞানবিজ্ঞানের স্বর্ণযুগ ছিলো মধ্যযুগ, এই যুগ ছিলো মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার দিয়ে বিশ্বকে আলোকিত করার যুগ। কিন্তু আধুনিক ইতিহাসবেত্তাগন মধ্যযুগকে অসভ্য বর্বর বলে মুসলমানদের আবিষ্কার গুলোকে জনসম্মুখ থেকে সরিয়ে ফেলেছেন। বইটি পড়ে আমি হতবাক হয়েছি এতো সব বিস্ময়কর ইতিহাসে একসাথে জানতে পেরে। সংক্ষিপ্ত বর্ণনা হলোও ৪৪৭ পৃষ্ঠার বইটিতে বিষয় ভিত্তিক তথ্য প্রমানের কোনো কমতি রাখেনি লেখক। তাই এটি সবার পাঠ করা উচিত।