শয়তান যিকিরবিমুখ বান্দাকে গুনাহের দিকে আহবান করে। অবাধ্য অন্তরে সে নিরবিচ্ছিন্ন ওয়াসওয়াসা দিতে থাকে। অবহেলায় পড়ে থাকা কাঠের গায়ে ঘুণপোকা ধরার মতো বান্দার অন্তরে সে জায়গা করে নেয়। এভাবে একপর্যায়ে সে বান্দাকে পুরোপুরি নিজের কবজায় নিয়ে নেয়। ফলে বান্দা হিতাহিতজ্ঞান হারিয়ে শয়তানের তাবেদারি করতে শুরু করে। জীবন হয়ে ওঠে অবসাদময়। অবসাদে ঘেরা জীবনে তখন আর কোনো আশা-ভরসা থাকে না। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হতাশার মতো মানসিক অস্থিরতা তাকে বিচলিত করে রাখে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) হিসাব অনুযায়ী বর্তমান পৃথিবীতে হতাশাগ্রস্থ রোগীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি। তবে বাস্তবিকপক্ষে এর সংখ্যা আরো অনেক বেশী। WHO এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী আরো বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে এসেছে। যেমন–
১. বৈশ্বিক অসুস্থতার কাতারে প্রথমেই রয়েছে হতাশা।
২. হতাশায় নিমজ্জিত মানুষের মধ্যে নারীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
৩. যাবতীয় ক্ষেত্রে অক্ষমতা মূলত হতাশা থেকে সৃষ্ট।
৪. যে জিনিস আত্মহত্যার দিকে সবচেয়ে বেশি প্ররোচিত করে, তা হলো হতাশা।
৫. হতাশাগ্রস্থ রোগীদের সিংহভাগের বয়স ২০-২৯ বছরের মধ্যে।(২)
এই ভয়ানক ব্যাধির সমাধান একটাই। আর তা হলো আল্লাহর যিকির। যিকরুল্লাহই পারে এই ব্যাধি নিরাময় করতে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
জেনে রেখো, আল্লাহর যিকিরেই রয়েছে অন্তর প্রশান্তি।
কাজেই জীবন থেকে হতাশাকে বিদায় জানাতে যিকরুল্লাহ ভিন্ন আর কোনো উপায় নেই। সেই কাঙ্ক্ষিত উপায়ের তালাশে আযান প্রকাশনীর এবারের প্রকাশনা ‘যিকরুল্লাহ : মুমিন হৃদয়ের প্রাণ।’ বইটি জগদ্বিখ্যাত ইমাম হাফিয ইবন কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ রহিমাহুল্লহ এর অনবদ্য কিতাব ‘আল-ওয়াবিলুস সাইয়্যিব’ এর অনুবাদ। দক্ষ হাতে বইটি ভাষান্তর করেছেন আব্দুল্লাহ মাহমূদ হাফিযাহুল্লাহ।
এই বইটি থেকে পাঠকবর্গ যিকির সংক্রান্ত জীবনঘনিষ্ঠ বিভিন্ন বিষয়াবলী জানতে পারবেন। বিশেষকরে যিকিরের উপকারিতা, উত্তম-অনুত্তম যিকির, যিকিরের সময় শয়তানের প্রতিক্রিয়া, যিকির কীভাবে করতে হয়, কখন করতে হয়, যিকিরের দুনিয়াবি ও পারলৌকিক ফায়দা কী, যিকির কীভাবে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সাহায্য করে, যিকিরের মাধ্যমে কীভাবে অন্তর প্রশান্ত হয়—এই বিষয়গুলো পাঠক বিস্তারিত জানতে পারবে, ইন শা আল্লাহ।