ইমাম ইবন কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহকে বলা হয় 'অন্তরের চিকিৎসক'। মানুষের অন্তরের পত্রপল্লবে তার অবাধ বিচরণ ছিলো। আনন্দ-বেদনা, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, হর্ষ-বিষাদের কারণ খুঁজে বের করতে এবং সেগুলোর সমাধান দিতে তার কোনো জুড়ি নেই। অন্তরের সাথে ইসলামের সম্পর্ক কী? আল্লাহর সম্পর্ক কী? শয়তানের সম্পর্ক কী? অন্তর কী চায়? কীসে খুশি হয়, কীসে কাঁদে?—এসব কিছুকে তিনি সুন্দর সুন্দর কথামালা দিয়ে সাজাতেন। লিপিবদ্ধ করতেন কলম ও কাগজের মাধ্যমে।
তারই ধারাবাহিকতায় আল-ফাওয়াইদ কিতাবটিও তার রচিত অসাধারণ একটি কিতাব। এই অসাধারণ কিতাবটি বাকী আট দশটা কিতাবের মতো নয় যেখানে অধ্যায় থাকে, বিষয়বস্তু থাকে, শ্রেণীবিভাগ থাকে। বরং এই কিতবে রয়েছে জীবন ও ঈমান জাগানিয়া উচ্চমাত্রার বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তাভাবনার বহিঃপ্রকাশ। আল্লাহ আযযা ওয়াজাল তার বান্দাদের মাঝ থেকে বাছাই করে কিছু বান্দাকে হিকমাহ ও অঢেল জ্ঞান গরিমা ঢেলে দেন। ইমাম ইবন কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ তাদেরই একজন।
ইমাম ইবন কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ তার এই মুক্তোঝরা কথামালাগুলোকে এক বৈঠকে বা এক সপ্তাহে বা কোনো নির্দিষ্ট সময়ে লিপিবদ্ধ করেননি। বরং জীবন চলার প্রতিটি কদমে প্রতিটি বাঁকে যখনই কোনো মুক্তোদানা কুড়িয়ে পেতেন, তখনই সে মুক্তোদানা লিখে রাখতেন। যখনই তার চিন্তার জগতে কোনো একটি বিষয় উঁকি দিত, সাথে সাথে তা লিপিবদ্ধ করে রাখতেন। চলতি পথের বিভিন্ন মোড়ে প্রাপ্ত শিক্ষাগুলো খাতার পাতায় টুকে রাখা বিচ্ছিন্ন মুক্তোদানা ধীরে ধীরে একটি মুক্তোমালায় রূপ নেয়।
আযান প্রকাশনী এমন একটি মুক্তোমালা পাঠকদের হাতে উপহার দিতে পেরে আনন্দিত। আমাদের বিশ্বাস, মুখতাসার এই কিতাব থেকে বাংলাভাষী পাঠক অনেক বেশি উপকৃত হবেন, ইন শা আল্লাহ। ইমাম ইবন কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ সাথে জীবনের বিভিন্ন পথেঘাটে সফর করবেন। সেই পথেঘাটে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা ও পরিস্থিতির সাথে পরিচিত হবেন। আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও শয়তানের সঙ্গ বর্জনের যাবতীয় পাথেয় পাবেন এবং যাবতীয় পঙ্কিলতা থেকে হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করার উপায় সন্ধান পাবেন, ইন শা আল্লাহ।