ইসলামী ব্যাংকিং এবং অর্থনীতি নিয়ে গতানুগতিক ধারার আলোচনাগুলোর সাধারণ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। এ ধরনের অধিকাংশ আলোচনায় প্রথমে ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী রিবা বা সুদের সংজ্ঞা এবং বিভিন্ন প্রকারভেদ উপস্থাপন করা হয়। তারপর আলোচনা বা সমালোচনা চলে যায় ইসলামী ব্যাংকগুলোর ঋণ বা বিনিয়োগের বিভিন্ন মোডগুলোর দিকে। আমার অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে এ ধরনের অ্যাপ্রোচে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক কিছু প্রশ্নের আলোচনা অনুপস্থিত থাকে। ব্যাংক কীভাবে কাজ করে, ব্যাংকিং-ব্যবস্থার সূচনা কীভাবে হলো, উদ্দেশ্য ও কর্মপদ্ধতির দিক থেকে ব্যাংক কি আদৌ ইসলামী হতে পারে কি না—এ মৌলিক প্রশ্নগুলোর বদলে ঘুরেফিরে আলোচনা বিভিন্ন মোডকে ঘিরে আবর্তিত হতে থাকে।
.
ড. যাহিদ সিদ্দিকী অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এ প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। ঋণ বা বিনিয়োগের বিভিন্ন মোড কতটা ইসলামসম্মত, সে তর্ক থেকে বের হয়ে ইসলামী ব্যাংকিং এর আলোচনাকে ভাগ করেছেন তিনটি মূল প্রশ্নের আলোচনায় :
.
১) ব্যাংক মূলত কীভাবে কাজ করে, এবং একে কি আদৌ ইসলামী বানানো সম্ভব?
২) ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কি শরীয়াহর উদ্দেশ্য অর্জন সম্ভব?
৩) ইসলামী ব্যাংকগুলো বর্তমানে যেভাবে কাজ করছে তা কি পরিপূর্ণভাবে ইসলামসম্মত?
.
গতানুগতিক আলোচনার মূল ফোকাস থাকে তৃতীয় প্রশ্নটি নিয়ে। কিন্তু ড. যাহিদ সিদ্দিকী জোর দিয়েছেন প্রথম দুটি প্রশ্নের ওপর। এবং এর মাধ্যমে ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং এর ক্রিটিককে নতুন মাত্রায় সাজিয়েছেন। পাশাপাশি উত্থাপন করেছেন শক্তিশালী জ্ঞানতাত্ত্বিক ও মতাদর্শিক আপত্তি।