আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে দুনিয়াতে পাঠানোর শত-সহস্র বছর আগেই পৃথিবীকে সাজিয়েছেন প্রাকৃতিক সম্পদে। আগুন, পানি, বাতাস, মাটি- এ মূল চার উপাদানে সৃজন করলেন প্রকৃতি। পাহাড়, সাগর, নদী-নালা, খাল-বিল, গাছপালা, উদ্ভিদ ও তৃণলতা, ফলমূল, বৃক্ষ-তরু; পশু পাখি, জীব, জড় প্রাণী- এসব দিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ করে সাজালেন এই জগৎ ও সংসার।
সৃষ্টি ও সৃষ্টজগতের শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা ও সামাজিক সাম্য বজায় রাখা অপরিহার্য। এ জন্য প্রয়োজন দূষণমুক্ত প্রকৃতি ও সুশৃঙ্খল সামাজিক পরিবেশ। জলবায়ু ও আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন মানবসভ্যতার জন্য এক অশনিসংকেত। বৈশি^ক উষ্ণতা বৃদ্ধি, বরফ গলে যাওয়া এবং ওজনস্তরের ফুটো বা ফাটল সভ্যতার ধ্বংসের কারণ হতে পারে। সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, (অর্থ) জলে-স্থলে বিপর্যয় মানুষের কৃতকর্মের ফল।-সুরা রুম : ৪১।
এমতাবস্থায় এমন আজাব ও গজব তথা সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসবে, যা থেকে কেউ রক্ষা পাবে না এবং সে প্রকৃতির রোষ থেকে নিরপরাধ লোকেরাও রেহাই পাবে না। এ প্রকার সামাজিক ও জাতীয় দুর্যোগের কারণ হলো, ‘আমর বিল মারুফ’ তথা সৎকাজের আদেশ ও ‘নাহি আনিল মুনকার’ অর্থাৎ অসৎকাজের নিষেধ করা ছেড়ে দেওয়া। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো বিশ্বাস, সৎকর্ম, সদুপদেশ ও ধৈর্য। মানুষের বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য অন্য যে গুণটি বিশেষ প্রয়োজন, তা হলো, দায়িত্বশীল হওয়া। সৎকর্ম ও কর্তব্যপরায়ণতা ব্যতীত শুধু ইমান মানুষকে অনিষ্ট, অকল্যাণ ও অমঙ্গল থেকে সম্পূর্ণ রক্ষা করতে পারে না। অন্য যেসব বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলি পারস্পরিক, যা সামগ্রিক ক্ষতি, অমঙ্গল ও অকল্যাণ থেকে বাঁচার জন্য একান্ত জরুরি তা হচ্ছে সৎকর্ম, সদুপদেশ ও ধৈর্য তথা সহিষ্ণুতা ও সহনশীলতা।
সম্মানিত লেখক এই গ্রন্থে আল্লাহর শাস্তি ও বিপর্যয় হতে বেঁচে থাকা বিষয়ে কুরআনের আয়াত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিভিন্ন হাদিস, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়িগণের মূল্যবান বক্তব্য অত্যন্ত চমৎকার ও অভিনব পদ্ধতিতে উপস্থাপন করেছেন।